পরীক্ষায় বাংলার ইতিহাস
আমি তখন ক্লাস নাইন এ পড়ি। বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। সেই সময়ে দুটো বিষয়ের পরীক্ষা একই দিনে নেওয়া হত। এখনো সেই প্রচলন আছে কিনা জানিনা। একদিন সন্ধেবেলায় বই খুলে পড়ছি। পরের দিন ইতিহাস ও বাংলা রচনা ও ব্যাকরণ (বাংলা ফার্স্ট পেপার) পরীক্ষা। মোট দুশো নম্বর। খানিক্ষণ ইতিহাস পড়ার পর মনে হল, আর পড়ে বিশেষ লাভ নেই, এমনিও বানাতে হবে অমনিও বানাতে হবে। নিজেকে পুরাকালের ইতিহাস রচয়িতা মনে করে আপন মনে মাধুরী মিশিয়ে লিখে যেতে হবে পাতার পর পাতা। হঠাৎ মনে হল বাংলায় তো সবই আনসিন আসবে, পড়ে কোন লাভ নেই, তার চেয়ে বরং আনন্দমেলার সংকলন গুলো নিয়ে বসি। গল্পও পড়া হবে আবার রচনা লেখার জন্য কিছু নতুন শব্দভাণ্ডারও তৈরি থাকবে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। আনন্দমেলার উপন্যাস গুলো পড়তে শুরু করে দিলাম। দাদা পাশে বসে ছিল। ওকে বলতে হল না, নিজেই বলল মা এলে সতর্ক করে দেবে। মা কে আমরা খুবই ভয় পেতাম, এবং তাঁর নামকরণ করা হয়েছিল হিটলার। সেই বিশেষ নামটি কেবল আমরা ও বাবা জানতেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। অবাক করে দিয়ে বাবা হাজির হলেন। আমরা পড়াশুনো করবার সময় বাবা খুব একটা আসতেন না। আমাদের প্রতি ওঁর অটুট বিশ্বাস ছিল। দাদা আমাকে সতর্ক করার সুযোগই পেল না। অতর্কিতে আক্রমণ করার ভঙ্গিতে বাবা বললেন," তা তোর না কাল ইতিহাস পরীক্ষা? পড়া তৈরি? আনন্দমেলা পড়ছিস যে?" আমি বিন্দুমাত্র ঘাবড়ে না গিয়ে বলেছিলাম, "বাবা, ইতিহাস তো এখান থেকেই তৈরি হয়।" বলে আবার সেই উপন্যাসে মনোনিবেশ করলাম। বাবা হাসি চেপেছিলেন না রেগে গিয়েছিলেন, তা আর মনে নেই। তবে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে (ব্যঙ্গ মিশ্রিত কৌতুক ও কপট রাগ। বাবাকে যাঁরা চেনেন তাঁরা আশাকরি ভাল বুঝতে পারবেন) বলে উঠলেন, "হুমম। তা তো অবশ্যই। তা সেই ইতিহাস লিখে পাশ করবে তো লোকজন? না হলে কিন্তু হিটলার ইতিহাস ফেল রহস্য উদঘাটন করে ফেলবেন। এবং তারপর কি হবে আমি জানিনা।" নাহ। হিটলার আর তলব করেননি। সে যাত্রায় মায়ের হাতের মার থেকে খুব বাঁচা বেঁচে গিয়েছিলাম।
আমি তখন ক্লাস নাইন এ পড়ি। বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। সেই সময়ে দুটো বিষয়ের পরীক্ষা একই দিনে নেওয়া হত। এখনো সেই প্রচলন আছে কিনা জানিনা। একদিন সন্ধেবেলায় বই খুলে পড়ছি। পরের দিন ইতিহাস ও বাংলা রচনা ও ব্যাকরণ (বাংলা ফার্স্ট পেপার) পরীক্ষা। মোট দুশো নম্বর। খানিক্ষণ ইতিহাস পড়ার পর মনে হল, আর পড়ে বিশেষ লাভ নেই, এমনিও বানাতে হবে অমনিও বানাতে হবে। নিজেকে পুরাকালের ইতিহাস রচয়িতা মনে করে আপন মনে মাধুরী মিশিয়ে লিখে যেতে হবে পাতার পর পাতা। হঠাৎ মনে হল বাংলায় তো সবই আনসিন আসবে, পড়ে কোন লাভ নেই, তার চেয়ে বরং আনন্দমেলার সংকলন গুলো নিয়ে বসি। গল্পও পড়া হবে আবার রচনা লেখার জন্য কিছু নতুন শব্দভাণ্ডারও তৈরি থাকবে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। আনন্দমেলার উপন্যাস গুলো পড়তে শুরু করে দিলাম। দাদা পাশে বসে ছিল। ওকে বলতে হল না, নিজেই বলল মা এলে সতর্ক করে দেবে। মা কে আমরা খুবই ভয় পেতাম, এবং তাঁর নামকরণ করা হয়েছিল হিটলার। সেই বিশেষ নামটি কেবল আমরা ও বাবা জানতেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। অবাক করে দিয়ে বাবা হাজির হলেন। আমরা পড়াশুনো করবার সময় বাবা খুব একটা আসতেন না। আমাদের প্রতি ওঁর অটুট বিশ্বাস ছিল। দাদা আমাকে সতর্ক করার সুযোগই পেল না। অতর্কিতে আক্রমণ করার ভঙ্গিতে বাবা বললেন," তা তোর না কাল ইতিহাস পরীক্ষা? পড়া তৈরি? আনন্দমেলা পড়ছিস যে?" আমি বিন্দুমাত্র ঘাবড়ে না গিয়ে বলেছিলাম, "বাবা, ইতিহাস তো এখান থেকেই তৈরি হয়।" বলে আবার সেই উপন্যাসে মনোনিবেশ করলাম। বাবা হাসি চেপেছিলেন না রেগে গিয়েছিলেন, তা আর মনে নেই। তবে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে (ব্যঙ্গ মিশ্রিত কৌতুক ও কপট রাগ। বাবাকে যাঁরা চেনেন তাঁরা আশাকরি ভাল বুঝতে পারবেন) বলে উঠলেন, "হুমম। তা তো অবশ্যই। তা সেই ইতিহাস লিখে পাশ করবে তো লোকজন? না হলে কিন্তু হিটলার ইতিহাস ফেল রহস্য উদঘাটন করে ফেলবেন। এবং তারপর কি হবে আমি জানিনা।" নাহ। হিটলার আর তলব করেননি। সে যাত্রায় মায়ের হাতের মার থেকে খুব বাঁচা বেঁচে গিয়েছিলাম।
No comments:
Post a Comment